কাতারে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপ ফুটবলকে কেন্দ্র করে ঢাকা শহরে শুরু হয়েছে উৎসবের আমেজ। আগামী ২০ নভেম্বর থেকে কাতারে বিশ্বকাপ ফুটবল শুরু হবে, আর বাংলাদেশে এর উন্মাদনা ইতিমধ্যেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া দেশগুলোর পতাকা বিক্রির ধুম পড়েছে, বাসার ছাদ থেকে শুরু করে রাস্তাঘাটে উড়ছে পছন্দের দেশের পতাকা।
গত শুক্রবার (৪ নভেম্বর) ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বহু মানুষকে বিভিন্ন দেশের পতাকা বিক্রি করতে দেখা গেছে। পতাকা বিক্রেতা মো. জুয়েল (৩৫) বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, “বিশ্বকাপের আমেজ ঢাকায় এক-দেড় মাস আগে থেকেই শুরু হয়েছে। বিভিন্ন দেশের সমর্থকরা তাদের পছন্দের দলের পতাকা কিনতে শুরু করেছে। আমি ছোট, বড়, মাঝারি সব ধরনের পতাকা বিক্রি করি। ছোট পতাকাগুলো মূলত শিশুরা কিনছে, আর বড় পতাকাগুলো ছাদের ওপর উড়ানোর জন্য বেশি জনপ্রিয়।”
জুয়েল ঢাকায় এসেছেন ১৯ দিন আগে কিশোরগঞ্জ থেকে। তিনি জানান, ৩০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে তিনি এখানে এসে পতাকা বিক্রি করছেন। ঢাকার অলিগলি ঘুরে তিনি বাংলাদেশ, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, স্পেন, সৌদি আরব, ইংল্যান্ড, পর্তুগাল, জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশের পতাকা বিক্রি করছেন।
জুয়েলের মতে, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল এবং বাংলাদেশের পতাকার চাহিদা সবচেয়ে বেশি। তবে তার আক্ষেপের জায়গা হলো বিক্রি কম হওয়া। প্রতিদিন ৬০০ থেকে ৭০০ টাকার পতাকা বিক্রি করলেও, যা লাভ হয় তা দিয়ে খাওয়া-দাওয়া আর বাসা ভাড়াতেই চলে যায়। তিনি বলেন, “বিশ্বকাপের আগে পতাকা বিক্রি বাড়বে আশা করছি।”
বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় পতাকার দাম কিছুটা বাড়বে বলে তিনি মনে করেন। বর্তমানে ৫ ফুটের পতাকা ১৫০ টাকায় এবং ৬ ফুটের পতাকা ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে বিশ্বকাপ শুরু হলে দাম কিছুটা বাড়বে বলে তার প্রত্যাশা।
ঢাকায় পতাকা বিক্রি করা সহজ নয় বলে জুয়েল জানান। কিছু এলাকায় পতাকা বিক্রি করতে সমস্যা হয়, আবার কিছু জায়গায় বিনামূল্যে পতাকা চাওয়া হয়। গুলশান-১ চত্বরে ট্রাফিক পুলিশও সমস্যা সৃষ্টি করে। তিনি আরও বলেন, “দুই দিন আগে আমার এক ভাইকে সারা দিন আটকিয়ে রাখা হয়েছিল পতাকা বিক্রির জন্য। ৩০০ টাকা দিয়ে তাকে ছাড়া হয়েছে।”
জুয়েল আশাবাদী যে, বিশ্বকাপ শুরুর আগেই তিনি সব পতাকা বিক্রি করে ফেলবেন। “এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে হবে না, আশা করি সামনে কয়েক দিনের মধ্যেই সব পতাকা বিক্রি হয়ে যাবে,” বলে তিনি আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেন।